আকাশ দিনের বেলা নীল আর রাতের বেলা কালো দেখায় কেন?
দিনের বেলা আকাশের দিকে তাকালে দেখা যাবে সেটা নীল রঙ হয়ে বসে আছে। আচ্ছা, আকাশ নীল রঙের হয় কেন? অনেক আগে থেকেই মানুষের মনে এই প্রশ্নটির উদয় হয়েছিল। কিন্তু বহু শতাব্দি পর্যন্ত জ্ঞানী-গুনি ব্যক্তিরা অনেক হিসাব কষেও সেই উত্তর বের করতে পারেননি।
এর উত্তর হলো, পৃথিবীর চারপাশে বায়ুমন্ডলে ভাসমান ছোট ছোট ধূলিকণা রয়েছে। সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে আসার সময় ঐ কণাগুলি দ্বারা বিচ্ছুরিত হয়ে যায়। এবং নীল রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম বলে Rayleigh scattering এর সূত্র অনুযায়ী তা সবচেয়ে বেশি বিচ্ছুরিত হয়। যার কারনে দিনের আলোতে আকাশকে নীল দেখায়। আর রাতের বেলা সূর্যরশ্মির অনুপস্থিতির কারনে বিচ্ছুরন ঘটেনা এবং আকাশ কালো দেখায়।
পছন্দ হলোনা? আরো ব্যাখ্যা দরকার? ঠিক আছে।
প্রথমে সহজ একটা প্রশ্ন করি,আচ্ছা সূর্যের আলোর রঙ কি?
সাদা! হ্যাঁ বহু যুগ পর্যন্ত সবার এই ধারনাই ছিলো। স্যার আইজাক নিউটন পরীক্ষা করে দেখান যে সূর্য থেকে পাওয়া সাদা আলো আসলে সাতটি আলাদা রঙের সমন্বয়। প্রতিটি আলাদা রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মান আলাদা। লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি আর বেগুনী রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম।
১৮৫৯ সালে জন টিন্ড্যাল চমৎকার একটি পরীক্ষা করেন । একটি পানির মধ্যে দুধ এবং সাবান মিশিয়ে দেন। এবার তরলের পাত্রের একপাশে আলো ফেললে , দেখা যায় অপর পাশ থেকে আলোর নীলাভ আলোক রশ্মিগুলি বেশি বিচ্ছুরিত হচ্ছে (Tyndall Effect) ।
স্বচ্ছ পানির মধ্যে অবস্থিত সাবান ও দুধের ক্ষুদ্র কণিকাগুলি আলোর এই বিচ্ছুরন সৃষ্টি করে। এর কয়েক বছর পরে রেইলি এ বিষয়টি নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষনা করে আলোর বিচ্ছুরনের নতুন একটি তত্ত্ব আবিস্কার করেন , যা Rayleigh scattering নামে পরিচিত। Rayleigh scattering অনুযায়ী,
অর্থাৎ বিচ্ছুরন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (চতুর্থ ঘাতের) ব্যস্তানুপাতিক।
বেশি কাঠখোট্টা হয়ে গেলো? সহজ ভাষায় এর অর্থ হলো, যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম তা বেশি বিচ্ছুরিত হবে। এবং নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য লাল আলোর থেকে অনেক কম। আর বেগুনী আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম (visible light এর মধ্যে)।
এখন প্রশ্ন হলো, বায়ুমন্ডলে তো পানির বাস্পকণাও ভেসে বেড়ায়! তাহলে আকাশের নীল রঙের জন্য শুধু ধূলিকণাকেই কেন দায়ী করা হয়?
মজার ব্যাপার হলো, টিন্ড্যাল আর রেইলি দুজনে অবশ্য ভেবেছিলেন, বাস্প, ধূলিকণা সব কিছুই আকাশের রঙ পরিবর্তনের জন্যে দায়ী। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে দেখেন যে, যদি বাস্পকণাও বিচ্ছুরনের কারন হতো, তাহলে স্থানভেদে আদ্রতা, কুয়াশা ইত্যাদির ভিন্নতার কারনে এক এক স্থানে আকাশের রঙ এক এক রকম দেখাতো!!! একইসাথে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হন যে, আকাশের ভিন্ন ভিন্ন স্তরে অবস্থিত অক্সিজেন আর নাইট্রোজেনের molecule গুলোই এই বিচ্ছুরন-টিচ্ছুরন ঘটিয়ে আকাশকে নীলবর্ণ দেখানোর পক্ষে যথেস্ট!
একই সাথে ১৯১১ সালে আইন্সটাইন যখন তাঁর scattering of light from molecules এর থিওরী প্রকাশ করেন তখন তাদের এই ধারনা আরো বেশি পক্ত হয়ে ওঠে। :D আবার মূল বিষয়ে আসা যাক, নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম বলে সেটা বেশি বিচ্ছুরিত হয় এবং সেকারনে আকাশ নীল দেখায় সেটা নাহয় বোঝা গেলো। তাহলে বেগুনী রঙ্গের আলোকরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্যতো নীল আলোর থেকেও কম!! তাহলে আকাশ কেন বেগুনী দেখায় না??
প্রথমত বায়ুমন্ডলে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মির বিচ্ছুরন সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য constant নয়। একই সাথে বায়ুমন্ডল পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে এত বেশি উচুতে অবস্থিত যে সেখান থেকে বিচ্ছুরিত আলো পৌছাতে পৌছাতে atmosphere দ্বারা ঐ বেগুনী আলোর অনেকখানিকটা শোষিত হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত, মানুষের রেটিনায় তিন ধরনের cone থাকে। অন্যান্য রঙের চেয়ে এরা লাল, নীল এবং সবুজ আলোতে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীলতা দেখায়। এই cone গুলোর বিভিন্ন অনুপাতের সংবেদনশীলতার সমন্বয়েই আমরা ভিন্ন ভিন্ন রঙ দেখে থাকি। আমাদের চোখের কোষগুলি 'অতিবেগুনী' আলোক-সংবেদনশীল না। একারনে মানুষের কাছে আকাশকে গাঢ় বেগুনী বলে মনে হয়না।
এতক্ষনতো আকাশের নীল রঙ নিয়ে অনেক কথাই বলা হল! তাহলে প্রশ্ন আসে, সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সময় আর ভোরবেলা সূর্যদয়ের সময় আকাশ কমলা দেখায় কেন? নাহ! আজ থাক! এপ্রশ্নের উত্তর নাহয় পরের কোন এক পোস্টে দেব। :D
এর উত্তর হলো, পৃথিবীর চারপাশে বায়ুমন্ডলে ভাসমান ছোট ছোট ধূলিকণা রয়েছে। সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে আসার সময় ঐ কণাগুলি দ্বারা বিচ্ছুরিত হয়ে যায়। এবং নীল রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম বলে Rayleigh scattering এর সূত্র অনুযায়ী তা সবচেয়ে বেশি বিচ্ছুরিত হয়। যার কারনে দিনের আলোতে আকাশকে নীল দেখায়। আর রাতের বেলা সূর্যরশ্মির অনুপস্থিতির কারনে বিচ্ছুরন ঘটেনা এবং আকাশ কালো দেখায়।
পছন্দ হলোনা? আরো ব্যাখ্যা দরকার? ঠিক আছে।
প্রথমে সহজ একটা প্রশ্ন করি,আচ্ছা সূর্যের আলোর রঙ কি?
সাদা! হ্যাঁ বহু যুগ পর্যন্ত সবার এই ধারনাই ছিলো। স্যার আইজাক নিউটন পরীক্ষা করে দেখান যে সূর্য থেকে পাওয়া সাদা আলো আসলে সাতটি আলাদা রঙের সমন্বয়। প্রতিটি আলাদা রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মান আলাদা। লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি আর বেগুনী রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম।
১৮৫৯ সালে জন টিন্ড্যাল চমৎকার একটি পরীক্ষা করেন । একটি পানির মধ্যে দুধ এবং সাবান মিশিয়ে দেন। এবার তরলের পাত্রের একপাশে আলো ফেললে , দেখা যায় অপর পাশ থেকে আলোর নীলাভ আলোক রশ্মিগুলি বেশি বিচ্ছুরিত হচ্ছে (Tyndall Effect) ।
স্বচ্ছ পানির মধ্যে অবস্থিত সাবান ও দুধের ক্ষুদ্র কণিকাগুলি আলোর এই বিচ্ছুরন সৃষ্টি করে। এর কয়েক বছর পরে রেইলি এ বিষয়টি নিয়ে আরো বিস্তারিত গবেষনা করে আলোর বিচ্ছুরনের নতুন একটি তত্ত্ব আবিস্কার করেন , যা Rayleigh scattering নামে পরিচিত। Rayleigh scattering অনুযায়ী,
অর্থাৎ বিচ্ছুরন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (চতুর্থ ঘাতের) ব্যস্তানুপাতিক।
বেশি কাঠখোট্টা হয়ে গেলো? সহজ ভাষায় এর অর্থ হলো, যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম তা বেশি বিচ্ছুরিত হবে। এবং নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য লাল আলোর থেকে অনেক কম। আর বেগুনী আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম (visible light এর মধ্যে)।
এখন প্রশ্ন হলো, বায়ুমন্ডলে তো পানির বাস্পকণাও ভেসে বেড়ায়! তাহলে আকাশের নীল রঙের জন্য শুধু ধূলিকণাকেই কেন দায়ী করা হয়?
মজার ব্যাপার হলো, টিন্ড্যাল আর রেইলি দুজনে অবশ্য ভেবেছিলেন, বাস্প, ধূলিকণা সব কিছুই আকাশের রঙ পরিবর্তনের জন্যে দায়ী। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে দেখেন যে, যদি বাস্পকণাও বিচ্ছুরনের কারন হতো, তাহলে স্থানভেদে আদ্রতা, কুয়াশা ইত্যাদির ভিন্নতার কারনে এক এক স্থানে আকাশের রঙ এক এক রকম দেখাতো!!! একইসাথে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হন যে, আকাশের ভিন্ন ভিন্ন স্তরে অবস্থিত অক্সিজেন আর নাইট্রোজেনের molecule গুলোই এই বিচ্ছুরন-টিচ্ছুরন ঘটিয়ে আকাশকে নীলবর্ণ দেখানোর পক্ষে যথেস্ট!
একই সাথে ১৯১১ সালে আইন্সটাইন যখন তাঁর scattering of light from molecules এর থিওরী প্রকাশ করেন তখন তাদের এই ধারনা আরো বেশি পক্ত হয়ে ওঠে। :D আবার মূল বিষয়ে আসা যাক, নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম বলে সেটা বেশি বিচ্ছুরিত হয় এবং সেকারনে আকাশ নীল দেখায় সেটা নাহয় বোঝা গেলো। তাহলে বেগুনী রঙ্গের আলোকরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্যতো নীল আলোর থেকেও কম!! তাহলে আকাশ কেন বেগুনী দেখায় না??
প্রথমত বায়ুমন্ডলে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মির বিচ্ছুরন সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য constant নয়। একই সাথে বায়ুমন্ডল পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে এত বেশি উচুতে অবস্থিত যে সেখান থেকে বিচ্ছুরিত আলো পৌছাতে পৌছাতে atmosphere দ্বারা ঐ বেগুনী আলোর অনেকখানিকটা শোষিত হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত, মানুষের রেটিনায় তিন ধরনের cone থাকে। অন্যান্য রঙের চেয়ে এরা লাল, নীল এবং সবুজ আলোতে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীলতা দেখায়। এই cone গুলোর বিভিন্ন অনুপাতের সংবেদনশীলতার সমন্বয়েই আমরা ভিন্ন ভিন্ন রঙ দেখে থাকি। আমাদের চোখের কোষগুলি 'অতিবেগুনী' আলোক-সংবেদনশীল না। একারনে মানুষের কাছে আকাশকে গাঢ় বেগুনী বলে মনে হয়না।
এতক্ষনতো আকাশের নীল রঙ নিয়ে অনেক কথাই বলা হল! তাহলে প্রশ্ন আসে, সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সময় আর ভোরবেলা সূর্যদয়ের সময় আকাশ কমলা দেখায় কেন? নাহ! আজ থাক! এপ্রশ্নের উত্তর নাহয় পরের কোন এক পোস্টে দেব। :D
This entry was posted on Saturday, June 16, 2012 at 8:30 PM and is filed under Physics, Science, প্রশ্ন, বিজ্ঞান. You can follow any responses to this entry through the RSS 2.0. You can